নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ শহরের বরফকল চৌরঙ্গী পার্কের সামনে মারামারির ঘটনায় আদালতে ডিবির ৪ সদস্যের নামে মামলা করেছেন জালালউদ্দিন। এতে ৫জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসী পার্কের মালিক আব্দুস সাত্তারকে। মামলার অন্য আসামীরা হলেন-ডিবির এএসআই আমিনুল (৪৮), বকুল (৫০), এসআই মিজান (৪৮) ও এসআই সায়েম (৪২)।
২৮ আগস্ট মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ‘ক’ অঞ্চলে ওই ৫জন সহ অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১২ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত আর্জি গ্রহণ করে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।
জালালউদ্দিনের পক্ষের আইনজীবী রফিকউদ্দিন জানান মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, খানপুর বরফকল খেয়াঘাট সংলগ্ন চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসি পার্কের সামনে মাইলাইফ ফেয়ার ফুড নামে একটি ফাস্টফুডের দোকানে জালালউদ্দিন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। চৌরঙ্গি পার্কের মালিক আব্দুল সাত্তার ওই দোকানটি বিভিন্ন সময়ে উচ্ছেদের চেষ্টা করছিলো। ২৬ আগস্ট রোববার রাত ৭টায় সাত্তারের ইন্ধনে ডিবির আমিনুল, বকুল, মিজান, সায়েম দোকানে ফাস্টফুড খাওয়ার জন্য আসে। এসময় জালালের ছেলে আল আমিন তাদেরকে যথারীতি কুলকফি, লাচ্ছি, বার্গার, ফোসকা তাদের খেতে দেয়। খাওয়া শেষে জালালের ছেলে আলামিন খাবার বিলের টাকা চাওয়া মাত্র আব্দুল ছাত্তারের পূর্ব পরিকল্পনা ভাবে ও নির্দেশ মোতাবেক ডিবির লোকজন ধমক দিয়া জানায় তারা ‘আমরা ডিবির লোক, কিসের বিল দিবো’ এবং তারা ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
জালাল উল্লেখ করেন, তার ছেলে আলামিন এগুলোতে প্রতিবাদ করায় তারা তাদের সাথে থাকা রাইফেল পিস্তল, শটগান দিয়ে আমার ছেলেকে এলোপাথারী বাইড়িয়ে শরীরে মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত ও নীলা ফুলা জখম করে এবং ক্যাশ থেকে নগদ দশ হাজার টাকা নিয়া যায়। এ খবর শুনে আমার স্ত্রী রীনা বেগম আসলে তাকেও মারধর করে। এক পর্যায়ে আমিনুলের হাতে থাকা পিস্তলের বাট দিয়ে জালালউদ্দিনের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া দোকান থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা লুটে নেয় ও মাসে ৫০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবী করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে খানপুর বরফকল খেয়াঘাট সংলগ্ন চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসী পার্কের সামনে মাইলাইফ কেয়ার ফাস্টফুড নামের একটি দোকানে পরিবার পরিজন নিয়ে খেতে যান ঢাকা ডিএসবির এস আই খায়রুল বাশার। এসময় মিল্কসেইক খাওয়ার পরে ওই মিল্কসেইকটি ভাল হয়নি দাবি করে বিল দিতে রাজী হয়নি সে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ঘটে। পরে সেখানে যান ডিবির এএসআই আমিনুল ও এএসআই বকুল। তখন তাদের সঙ্গে ফাস্টফুডটির মালিক ১১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ সভাপতি জালালের ছেলে আলামিন ও রবিন বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। বাকবিতন্ডার এসময় তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় যুবলীগ নেতা জালাল ও তার স্ত্রী রিনা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে আসলে ডিবির দুই এএসআই মিলে তাদেরকে মারধর করে। এতে করে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই দুই এএসআইকেও বেধড়ক পিটুনী দেয়। এসময় খবর পেয়ে ডিবির পরিদর্শক মাসুদ, এসআই মিজান ও এসআই সায়েম ঘটনাস্থলে আসলে লাঠিসোটা দিয়ে তাদেরকেও বেধড়ক পিটুনী দেয়া হয়। পরে অতিরিক্ত ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। আহতদের মধ্যে ডিবির এসআই মিজান ও এসআই সায়েম, যুবলীগ নেতা জালাল, ছেলে আলামিন ও রবিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।